এই ফুলের বাংলা নাম - জবা, ঝুমকা জবা, জবা কুসুম
অনেকে একটাকে রক্তজবাও বলে থাকে
অন্যান্য স্থানীয় নাম China Rose, Chinese hibiscus উল্লেখযোগ্য।
জবার আকর্ষন সবসময়ই। তা সে গ্রীষ্ম হোক বা বর্ষা, বসন্ত বা শীত। তাই জবা নিয়ে আজ কিছু জব্বর কথা হোক।
কোথা থেকে এল জবা :
উৎপত্তি চিন দেশে। কবে এ দেশে মা কালীর প্রতীক ফুল হয়ে গেল বলা ভার। ল্যাটিন নাম হিবিসকাস রোজা চাইনেনসিস। কীভাবে এল তাও বলা বেশ মুশকিল। মরসুমি জবাও এ দেশে এসেছে বিদেশি নামী বীজ কোম্পানিগুলির হাত ধরে।
কত জাত, কত রং :
দিশি জবা বলতে আলিপুর বিউটি বা পঞ্চমুখি লাল জবাকে আমরা পুজোর ফুল হিসাবে কাজে লাগাই। কিন্তু লাল, হলুদ, কালো, সাদা, গোলাপি- শুধু নানা রং-ই নয়, এগুলি বাইকালার অর্থাৎ একই ফুলে দুই বা ততোধিক রঙের জবা পাওয়া যাচ্ছে। কিছু নাম দিই (১) বিশ্বেশ্বরী-গেরুয়া, (২) ব্লু বার্ড-অ্যাশ, (৩) বিবেক-গেরুয়া, (৪) রেডড্রাগন-লাল, (৫) জার্মান চ্যাটার্জি-লাল হলুদ, (৬) বিবেকানন্দ- হালকা কমলা।
আজব জবার তালিকা : (১) বড় থালার মতো জবা-সামার সাম্বা, (২) কালো জবা-ব্ল্যাক ক্যাট/ব্ল্যাক্ক্যাট, (৩) বিশাল মরসুমি জবা- সাদার্ন বেলি, ডিস্কোবেলি, (৪) গন্ধওয়ালা জবা (এক মাত্র)-হাওয়াই হোয়াই, (৫) নীল জবা-পুরো ফোটে না, আধো ফুটে ঝরে যায়, (৬) মিনিয়েচার জবা-ছোটো ছোটো নয়নতারার মতো ফুল। দেখতে গাছটাও সুন্দর
কোথায় হবে, কীভাবে ফুটবে :
শর্ত (১) চাই রোদ, (২) খোলামেলা বাতাস, (৩) মাটিতে অথবা টবে। হাইব্রিড জবা ফুটবে এক ফুট উচ্চতাতেই। কলমের কি না জেনে দেখে নিতে হবে। ডগা কলম হলেই ভাল হয়। কুঁড়ি সমেত গাছ কিনুন, পারলে ফোটা ফুল সমেত। গোড়াটা দেখে নিন যদি ফুল গুলের গাছ হয়- গুল যেন ভাঙা না হয়। পটে যদি কেনেন তবে ছোটো পট থেকে বড় পটে দেবেন কিছু দিনের মধ্যেই। ১৫ দিন ছাড়া একদিন ১০ ফোঁটা মেটাসিড বা রোগর দিয়ে ১ লিটার জলে স্প্রে করে দিন গাছগুলিতে।
পটে জবা হওয়ার কায়দা :
পটে জবা খুব সোজা। মাটি হবে ৬০ ভাগ, ২০ ভাগ বালি, ২০ ভাগ পাতাপচা অথবা গোবর সার, দু'চামচ সুপার ফসফেট, এক মুঠো হাড় গুঁড়ো। মাটি তৈরি করে এক বা দু'মাস আগে থেকে ফেলে রাখতে পারলে ভাল। গাছ বসাবেন এক ফুট থেকে দু'ফুট হলে আট ইঞ্চি পটে এর বেশি হলে ১০-১২ বা আরও বড় পটে। প্রতি সপ্তাহে খোল পচার জল অথবা গুঁড়ো খোল এক চামচ ছড়িয়ে দিন। অসুবিধা হলে নিমশিল্ড অথবা সুধাসুষম বা ফিউশন।
পটে জবার সমস্যা :
(১) অ্যাফিড : সাদা ছোট ছোট পোকা একদম জেবড়ে লেগে থাকবে কচি ডগায়। ধরলে গাছ খতম।
(২) স্টেম বোরার : ডালের ভিতর গর্ত করে পোকা এগোতে থাকে। দামি জবার গলায় এই ফাঁস মারাত্মক।
(৩) গোড়া পচা : জল জমে গোড়া পচে যাওয়া ছত্রাকঘটিত রোগ।
(৪) মাকড়সা ধরনের কীট সমেত হাজারো সমস্যা।
রোগ-ভোগ নিবৃত্তির উপায় :
(১) প্রথম রোগে মেটাসিড বা রোগর ১০ ফোঁটা এক লিটার জলে দিয়ে ১৫ দিন ছাড়া স্প্রে করতে হবে।
(২) দ্বিতীয় রোগে মাটিতে ফুরাডন (Furadon) ফিয়ে (দু'চামচ) গাছ বসাতে হবে, রোগ ধরে গেলে উপায় নেই।
(৩) ব্যাভিস্টিন বা অনুস্টিন এক গ্রাম এক লিটার জলে গুলে গোড়ায় দিতে হবে ১৫ দিন ছাড়া।
(৪) ক্যালথিন বা অন্য মাকড়নাশী কীটনাশক দিতে হবে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন