সোমবার, ৬ এপ্রিল, ২০১৫

Lilium

লিলির আভায়

পশ্চিমবঙ্গের মাটিতে লিলি যে কত ভাল হতে পারে হাতে নাতে লিলি না ফুটিয়ে বিশ্বাসই করা যাবে না। কন্দ অর্থাৎ পিঁয়াজের মতো মূল থেকে দৃঢ় সবুজ পাতা ঠেলে বার হওয়ার আগেই হাত সমান লম্বা এক সজীব দন্ড আত্মপ্রকাশ করে বড়সড় গোটা চারেক অপূর্ব দর্শন ফুল মেলে ধরে লিলিতে। 



























লিলি নানা ধরনের
এমারিলিস লিলি, টাইগার লিলি, ইস্টার লিলি, বল লিলি, হিমান্থাস, ম্যাগেলা লিলি, স্পাইডার লিলি,বারমুডা লিলি প্রভৃতি। দুষ্প্রাপ্য গাছ সংগ্রহের নেশা থাকে তো অনেকেরই। এবার জানিয়ে দিই লিলি তৈরির সহজ পদ্ধতিটা। খুব সহজেই তৈরি করা যায় লিলি। বাল্ব কিনে অথবা সংগ্রহে থাকলে সেই বাল্ব মাটিতে অথবা টবে লাগাবেন। জানুয়ারি থেকে মার্চ মাসের  মধ্যে। এমনকি এপ্রিলেও। ফুল এখনই ফুটবে। এটা চিনে নিতে হয় পাতার মাঝখানে সাদা দাগ দেখে।

টবে গাছটি লাগানোর পদ্ধতি :
পট নিন ১০-১২ ইঞ্চি গভীরতার, হাড়গুঁড়ো, নিমখোল, সুপার ফসফেট আর অল্প শিংগুঁড়ো মেশান। এর থেকে একমুঠো অর্থাৎ ২৬ গ্রাম এক একটি টবের মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দিন। মাটিতে করলেও এই সার একমুঠো দিলেই হবে। মাটি ফুঁড়ে বেরিয়ে আসবে পুষ্পদন্ড। ফুল ফুটতে দেড় দু-মাস লাগবে। ফুল ফোটার আগে ১৫ দিন ছাড়া দুবার খোল পচা পাতলা জল দিন। এক একটা গাছে চারটে স্টিক আসতে পারে পরপর। এক একটা স্টিকে থাকবে চারটে ফুল। ফুলের শোভা মন ভরানোর পর ফুল শুকিয়ে কিছু দিনের মধ্যে পাতাও শুকিয়ে যাবে। আর বর্ষা পড়ার সঙ্গে সঙ্গে একে তুলে ধূয়ে শুকনো করে সংরক্ষণ করুন। টবে দু-এক বছর থেকেও যেতে পারে যদি জল না বসে। 
বল লিলি বা হিমান্থাস লাল রঙের ছাড়াও পাওয়া যায় হলুদ, গোলাপি আর নীল। বল লিলির হ্যাপা নেই বাগানে পুঁতে রাখুন। মাটি ফুঁড়ে বেরিয়ে আসবে পুষ্পদন্ড আর তার মাথায় দেখা দেবে ফুটবল আকৃতির চমৎকার ফুল। এরা যত্নের তোয়াক্কা করে না। আধাছায়া জায়গাতেও হয়। স্রেফ দন্ড লাগিয়ে কয়েকদিন জল দিয়ে যান আর হঠাৎ দেখুন ভুঁইফোড় রঙিন গোলক। টাইগার লিলিও প্রায় অযত্নে হয়। রঙও দুর্দান্ত। নার্শিসাসের সাদা ফুল অনেকের চোখে ভাসে কিন্তু এখানে পাওয়া মুশকিল আর ফোটানোও মুশকিল।

লিলির নতুন সিরিজ লিলি রাসফেল নজর কাড়া। বড় ফুলের মধ্যে নিউ স্মোকড আলমন, সাদা জয়েল, লাল সাদা মাই ভ্যালেন্টাইন, স্টার অফ হল্যান্ড, রেড লায়ন, লেমন লাইম, অপূর্ব দর্শন বাটার ফ্লাই প্রভৃতি ভীষন নজর কাড়ে। টবে বসানোর চার থেকে ছ-সপ্তাহের মধ্যেই সুন্দর ফুল হবে। হাইব্রিড এমারিলিস নানা রঙ আর আকৃতির, এশিয়াটিক, ওরিয়েন্টাল হাইব্রিড লিলির ঝাঁক ভর্তি ফুল মন মাতাবেই। এই সব গাছই আধ ছায়া বা কিছুটা রোদ আসা জায়গায় ভাল ফুল দেবে যত্নও সামান্যই।


শনিবার, ৪ এপ্রিল, ২০১৫

শুদ্ধতা, পবিত্রতা ও সৌন্দর্যের প্রতীক ফুল। শ্রদ্ধা প্রকাশের শ্রেষ্ঠ উপকরণও। ভালোবাসার অর্ঘ্য, প্রার্থনার নৈবেদ্য- কোথায় নেই এর ব্যবহার? কে আছে, ফুলের সৌন্দর্যে মুগ্ধ নয়? বাঙালীর জীবনাচরন, সংস্কৃতির পরতে পরতে ছড়িয়ে আছে এর সৌরভ। বসন্তবরন, ভালোবাসা দিবস, পয়লা বৈশাখ- সবি তো পুষ্পশোভিত। প্রেমিকার খোঁপা থেকে ফুলশয্যা- সবখানেই এর রঙ্গিন উপস্থিতি...।।





বৃহস্পতিবার, ২ এপ্রিল, ২০১৫

Adenium

অ্যাডেনিয়ামে নতুন চমক

একঘেয়েমি বর্ষা আর ভয়াবহ তাপের দাবড়ানি নস্যাৎ করে দিয়ে অপরূপ শরীরী বিভঙ্গ আর রঙিন কামনার রঙে ঢালা ফুল সম্ভার মেলে ধরেছে কিন্নরী। কিন্নরী নাম শুনে যাঁরা মনের নাম ভান্ডারে পাতা উল্টে দেখতে ছুটলেন, তাঁদের আশ্বস্ত করে জানাই, ওটা অ্যাডেনিয়াম ওবেসামের সুরেলা বাংলা তর্জমা। গণেশের ছবি বা মূর্তি যাঁরা ভালোবাসেন তাঁরা এই গাছে তাঁরই প্রাণময় প্রতিকৃতির আবেশ পাবেন। সঙ্গে অফুরন্ত ফুলের আশ্বাস। কিন্তু সেই ফুল যদি হয় একেবারে নতুন রঙের যা আগে কেউ দেখেনি? যদি তার পাতা হয় অন্য ধারার যার সন্ধান আগে কোনও উদ্যানবিদ পাননি? আর সেই রঙের আর আকৃতি যদি অনেক রকমফের আপনার মতো উদ্যান নিবেদিত প্রাণ মানুষের সমােন থরে থরে মেলে দেওয়া হয়?




এতদিন তো আমারা গোলাপি, ঘন গোলাপি, লাল প্রভৃতি গোটা তিনেক রঙেই আটকে গিয়ে একঘেয়েমিতে ভুগছিলাম। কিন্তু চোখের সামনে ফুল আর পাতা দেখে এদের অ্যাডেনিয়াম বলে বিশ্বাস না করতে চাইলেও উপায় নেই। 
নিশ্চয়ই আপনাদের মনে মনে প্রশ্ন জাগছে ভ্যারাইটিগুলো কেমন, যত্নআত্তি কী করতে হবে ইত্যাদি। 


ভ্যারাইটি : চকচকে লাল, ভীষন নজারকাড়া লাল। এর ফুল অনেক বড়, পাতা চওড়া আর সবুজ। গোলাপি স্ট্রাইপ ফুল। অজস্র ফুল হয়। পাতা সরু মাঝখানে শিরটা সাদা। সাদা ফুল, পাপড়ির প্রান্ত হালকা গোলাপি। খুব বেশি নজরকাড়া গোলাপি ঘেঁষা লাল ফুল। সরু পাতা, লাল ফুল। গোলাপির আর এক শেড সরু এবং পয়েন্টেড। এছাড়াও প্রায় দু'ধরনের ফুল অর্থাৎ মোট বারো ধরনের ফুল। সঙ্গে ভ্যারিগেটেড পাতার বাহার। সবকটারই গোড়া মোটা ও একইরকম। ১৮ ধরনের ভ্যারিগেটেড পাতার অনন্য বৈচিত্র।


ইফোরচিয়া মিলি : সারা বছর ধরে অজস্র ফুল দেবে কমলা, হলুদ, লাল-হলুদের মিশ্রন। টকটকে লাল এমন প্রায় ১৮টি ভ্যারাইটি। সব ক'টাতেই বড় বড় ফুল আর ফুলের থোকাও দু'হাত ভর্তি হয়ে যাবে। 
যত্নআত্তি : বীজ থেকে গাছ হয় অ্যাডেনিয়ামের। নতুন রঙ ফুলের কৃত্রিম পলিনেশন বা পরাগ সংযোগেই বাস্তবায়িত হয়েছে। তবী একসঙ্গে কয়েক হাজার গাছ না হলে করা আসম্ভব। অ্যাডেনিয়ামের সাধারণ যা যত্নআত্তি এতেও সেই একই ধারা। পাথুরে গাছ তার পেটমোটা অংশে জমিয়ে রাখে জল। ফলে গোড়ায় জল একেবারেই জমতে দেওয়া যাবে না। খুব বেশি জলও খাবে না।


টবে গাছটি লাগানোর পদ্ধতি :
মাটি তৈরি হবে এইরকমভাবে। সুরকি ৬০ শতাংশ, ২০ শতাংশ পাতা পচা সার, ২০ শতাংশ, ২০ শতাংশ মাটি, ৮ ইঞ্চি টবে এক মুঠো শিং কুচি ব্যস, খেল খতম। মিলি কাটিং থেকে হয়। তবে যেহেতু দুটোই সাকুলেন্ট তাই ফাঙ্গিসাইড নিয়তি লাগবে। মাঝে-মধ্যে হাড়ের গুঁড়ো জলে গুলে দিতে হবে গোড়ায় আর কোনও সার না দিলেই ভাল। ১০ দিন ছাড়া অবশ্যই ছত্রাক নাশক আর ১৫ দিন ছাড়া কীটনাশক চাই-ই।