শুক্রবার, ৬ জুলাই, ২০১৮

বাছাই করা বর্ষার ফুল

কামিনী: বৈজ্ঞানিক নাম Murraya exotica. গাছটার ঘন সবুজ পাতা, সাদা গন্ধে ভরা ফুল এটিকে বাগানের জন্য অপরিহার্য করে তুলেছে। এমনকী, টোপিয়ারি (Topiaryr)  অর্থাৎ গাছ ছেঁটে জ্যামিতিক, প্রানীর আকার দেওয়ার কাজেও কামিনী চমৎকার।

 এর ডবলফুল দেখতেও ভাল, গন্ধেও আমোদিত করে দশদিক। আজকাল ফ্লাওয়ার ডেকরেশন-এও এর উপযোগিতা আছে। বীজ বা গুটি কলম থেকে এর টারা তৈরি হয়। টবে এটা অনায়াসে হবে। উচ্চতা ও নিয়ন্ত্রণের মধ্যে অর্থাৎ তিন থেকে চার ফুটের মধ্যে রাখা যাবে।
করবী: এর বৈজ্ঞানিক নাম Werium oleander. এখানে শ্বেত আর রক্তকরবী পাওয়া গেলেও পন্ডিচেরীতে এর অন্তত আটটা ভ্যারাইটি রয়েছে। ভ্যারিগেন্টা, গোলাপী, থোকা, নানা রং। করবীর ডালপালা সরু আর গাছটা ১০-১২ ফুট পর্যন্ত হতে পারে মাটিতে বসালে।


 রক্তকরবীর আর এক নাম কোকিলাক্ষ আর শ্বেত করবীর ডবল ফুলকে পদ্মকরবী 
বলা হয়। সাদা করবীর শিকড় সর্পবিষনাশক বলে কথিত আছে। এ ছাড়া চুল পাকা, ব্রণ ও ক্রিমির জন্য ব্যবহৃত হয়। বর্ষাকালে দাবা কলম ও ডাল কলমে চারা করা হয়। দু'বছর পুরনো গাছের ডালই দরকার এই কাজে। গরু ছাগলে এর স্বাদ পছন্দ করেনা বলে বেড়ার ধারে লাগানো যায়।
অ্যালাম্যান্ডা: এই অপূর্ব লতানো বা আধা লতানো গাছটা বর্ষায় ফুলে ফুলে ভরে যায়। রোদ ভালোবাসে এরা।

 এরা মানে পাঁচ ধরনের অ্যালাম্যান্ডা - A Cathartica - ছোট হলুদ ফুল ছোট পাতা, A Cathartica Hendersonii - বড় হলুদ ফুল, A Cathartica williamssi - হলুদ ডাবল ফুল, A violauae - ভায়োলেট ফুল, Schottii. এরা সবাই কাটিং এ বংশবিস্তার করে। অবলম্বন পেলে তরতরিয়ে উপরে ওঠে, ছেঁটে রাখলে নিয়ন্ত্রণে থাকে টবেও।
মুসায়েন্ডা: Mussaenda erythrophylla - এর বৈজ্ঞানিক নাম। পাঁচ ধরনের পাবেন এতে। গোলাপী, হাল্কা সোনালী, সাদা, টকটকে লাল, আর হলুদ। সবচেয়ে নজর কাড়ে টকটকে লাল তবে বড় সুখী একটুও জলবসা সইবে না, শীতের শিশির ও না।

এদের নাম রিথ্রোফাইল, ফ্রনভোসা, ফিলিপিকা ইত্যাদি। সাদা সব চেয়ে শক্তপোক্ত আর সবচেয়ে বেশি ফুল দেয়। ছেঁটে রাখলে চমৎকার আকারও নেয়। এর বাংলা নাম পত্রলেখা এবং আদি বাসস্থান নাকি কঙ্গোর বন, মতান্তরে এই ভারত। এর রোদ চাই প্রচুর, পটেও সুন্দর মানিয়ে নেয়, ফুলের শেষে ছাঁট লাগে। কাটিং থেকে চারা হয় তবে ছালটা গ্রাফটিং করতে হয়।
পট তৈরি: মাটি। হবে দু'ভাগ, দোআঁশ মাটি এক ভাগ, গোবর সার এক মুঠো, হাড় গুড়ো, দু চামচ ফসফেট, পটের তলায় খোলামকুচি দিতে হবে। ১২ ইঞ্চি পটে গাছ বসাতে হবে। মাটিতে বসালে দের হাত গর্ত করে একটু সার দিন। মাটিতে বসালে জায়গা নির্বাচন জরুরি। রোদ আসে এমন জায়গা চাই আবার জল বসবে না এটাও দেখতে হবে। বর্ষায় এই গাছের গোড়ায় মোটা ঝাড় হয়ে যেতে পারে। পরিষ্কার রাখতে হবে বাগান। পোকা ও ছত্রাক মারতে যথাক্রমে  কীটনাশক এবং ছত্রাক নাশক স্প্রে করুন। ১৫ দিন অন্তর। নতুন গাছে এবার ফুল না নিয়ে খুঁটে ফেলে দিন কুঁড়ি আগামী বর্ষায় আপনার মন ও ভরাবেই।